Posted: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ।
যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস-২০২২ পালিত হয়েছে। দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে বিভিন্ন কর্মস‚চি নেয়া হয়। কর্মস‚চির অংশ হিসেবে স‚র্যোদয়ের সাথে সাথে সকাল ৬.৪৩ টায় প্রশাসনিক ভবনের সন্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান । পতাকা উত্তোলন শেষে প্রশাসনিক ভবনের সন্মুখে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর। এরপর সকাল ৯ টায় হাবিপ্রবি’র মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান-এর নেতৃত্বে টিএসসি’র সম্মুখ হতে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৯ টায় শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশীদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ। এরপর ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, কর্মচারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও বিজয় দিবসের কর্মস‚চির অংশ হিসেবে সকাল ১০ টায় টিএসসি প্রাঙ্গণে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এ সময় তিনি বিজয়ের মাস উপলক্ষে আয়োজিত “দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন“ বিষয়ক আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২২ এবং "মুজিব কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু" বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। দুপুর ২.৩০ মিনিটে তাজউদ্দিন আহমেদ হল সংলগ্ন খেলার মাঠে অনুষদভিত্তিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে “বিজয় দিবস ভলিবল টুর্নামেন্ট” এর চ‚ড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিকেল ৪ টায় জিমনেসিয়ামে অনুষদভিত্তিক শিক্ষার্থীদের (ছাত্রি) অংশগ্রহণে “মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট” এর চ‚ড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬ টায় জিমনেশিয়ামে অনুষদভিত্তিক শিক্ষার্থীদের (ছাত্র) অংশগ্রহণে “শহীদ শেখ কামাল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট” এর চ‚ড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান গুলোতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বাণী প্রদান করেন। বাণীতে তিনি বলেন, আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জনে ও অনন্য গৌরবে ভাস্বর এ দিন। এ উপলক্ষ্যে হাবিপ্রবি’র শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাই। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রভাতী স‚র্যের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছিল বাংলার রক্তস্নাত শিশির ভেজা মাটি, অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। মহান বিজয়ের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মহিয়সী নারী জাতির পিতার অনুপ্রেরণাদায়িনী বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, শহীদ শেখ কামাল, শহীদ শেখ জামাল, শহীদ শিশু শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী জাতির স‚র্য সন্তান ত্রিশ লক্ষ শহীদকে। বাংলাদেশের অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, এগিয়ে নিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে পিতার আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এ পর্যন্ত তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, দুটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ১টি শতবর্ষী পরিকল্পনা প্রণয়নসহ নানামুখি অর্থনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন, ২০২২ সাল হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলকের বছর। গত জুন মাসেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন বহুল আকাঙ্খিত পদ্মাসেতু। আশা করা হচ্ছে, এই সেতু জিডিপি’তে ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে। এছাড়া এরই মধ্যে পরীক্ষাম‚লকভাবে মেট্রোরেলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এটি রাজধানী ঢাকার পরিবহন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আগামীতে চট্টগ্রামে কর্ণফুলির নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল। এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছর নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার শুরু থেকেই সড়ক, মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে আসছে। রেলওয়েকে যুগোপযোগী করতে ১৩ হাজার ৩৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে।