Posted: ২৬ মার্চ, ২০১৮
যথাযোগ্য মর্যাদা ও দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে সোমবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৮ উদযাপিত হয়েছে। সকাল ৮ টায় পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের
সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অতঃপর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম-এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং
ছাত্র-ছাত্রীেেদর নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের র্যালী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। সকাল সাড়ে ৯:৩০টায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয়
শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। ক্রমান্বয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দ, কর্মচারিগণ,হাবিপ্রবি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এছাড়া,
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের ২৬ মার্চের বাণী পাঠ ও বিতরণ করা হয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৮ উপলক্ষে
ভাইস-চ্যান্সেলর একটি দেয়ালিকা উন্মোচন এবং শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন।
এরপর দিবসের তাৎপর্যের উপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-১ এ ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম এবং মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান
বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ।
অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানীরা বাংলাভাষা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক,
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সবধরনের বৈষম্য শুরু করতে থাকে যা এ বঙ্গের মানুষ সহ্য করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মানুষের মধ্যে স্বাধীনতাবোধ তৈরি হতে থাকে। ফলে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে
সাড়া দিয়ে সমগ্র জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি আরোও বলেন বাংলাদেশে নানা সময়ে সরকারের পালা বদলের ফলে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি থেকে আমাদের বেড়িয়ে এসে নতুন প্রজন্মকে সত্যিকার
ইতিহাস জানাতে হবে এবং তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমে উজ্জ্বিবীত করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের আমি প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। আজকের এই গৌরবময় দিনে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ সম্ভ্রম হারা মা-বোনকে।
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাসহ জীবিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। আমি জাতির জনকের সুযোগ্যা কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি কারন তাঁর সরকারের যোগ্য নেতৃত্বের কারনে
ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার রাসেল আলভী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাদিয়া ইসলাম প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা
বিভাগের সহকারী পরিচালক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম।
এরপরই শিক্ষক বনাম শিক্ষক, কর্মকর্তা বনাম কর্মকর্তা, কর্মচারী বনাম কর্মচারী, ছাত্র বনাম ছাত্রের মধ্যে প্রীতি ভলিবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষিকা বনাম শিক্ষিকা, ছাত্রী বনাম ছাত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় মিউজিক্যাল চেয়ার। শিশুদের জন্য বিস্কুট দৌড় এবং
সকলের জন্য যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাধুলা শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। বাদ যোহর শহীদদের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত
কমনা করে কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।