Posted: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
ব্যাপক আয়োজনের মধ্যদিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেন তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম-এর উদ্যোগে এবারই আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করা হলো। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে নয়টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীতের সুরের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম । পতাকা উত্তোলনের পর শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের সার্বিক মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত শেষে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিন করে আবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নেচে গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। শোভাযাত্রা শেষে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক গুরুপ্তপূর্ণ একটি দিন। আজকের দিনে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা সকলেই তার কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, তেভাগা আন্দোলনের জনক হাজী মোহাম্মদ দানেশ-এর নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে, আজকের দিনে তাকেও আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। তার নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন আমি আসার পর শিক্ষক- কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ সকলের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, গবেষণার জন্য বাজেট বৃদ্ধিসহ আইকিউএসি সেল গঠন, ৫০০ আসন বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু হল এবং সেখানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর মুরাল, ভার্চুয়াল ক্লাস রুম, অডিটোরিয়াম-২ কে আন্তর্জাতিক মানে রুপান্তর, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবের আধুনিকীকরণ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের জন্য হ্যাচারী, ভেটেরিনারি অনুষদের জন্য ডেইরি ফার্ম, পোল্ট্রি ফার্ম, আইভি রহামান হলের উন্নয়ন, টিএসসি এর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, শিশু পার্কের আধুনিকীকরণ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, জিমনেশিয়ামের উন্নয়ন, দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, দৃষ্টিনন্দন বিশ^বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট, কৃষক সেবা সেন্টার, মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক, কেন্দ্রিয় মসজিদে এয়ার কন্ডিশন মেশিন স্থাপন, নির্মাণাধীন ১০ তলা একাডেমিক ভবন, নির্মাণাধীন ৬ তলা আবাসিক ভবন, ছাত্রীদের জন্য ৬ তলা হলের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন, ৫ টি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, ছাত্র পরামর্শ বিভাগের ডিজিটালাইজেশন । তিনি আরও বলেন ২০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩৫ টি যানবাহন রয়েছে এর মধ্যে আমার আড়াই বছরে বাস, মাইক্রো, এ্যাম্বুলেন্সসহ ১১ টি যানবাহন ক্রয় করা হয়েছে। তিনি বলেন আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই, আমি কাজ করতে চাই, সকলের সহযোগিতা পেলে আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছা আছে। পরিশেষে সকলকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক, পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ^াস, পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. ফাহিমা খানম, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. খালেদ হোসেন, আইআরটি’র পরিচালক প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক প্রফেসর মো. রাজিব হাসান, শেখ রাসেল হলের হল সুপার প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজসহ বিশ^বিদ্যালয়ের সকল স্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭৫ পাউন্ডের একটি কেক কাটা হয় এবং পরে ছাত্রলিগের পক্ষ থেকে আরও দুটি সহ মোট ৪টি কেট কাটেন ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়। কেক কাটা শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গরীব শিশুদের মাঝে ফলদ বৃক্ষ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখা আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী ও দানেশ ব্লাড ব্যাংকের আয়োজনে বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপিং এর উদ্বোধন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়। এরপর হাবিপ্রবি শিল্প ও সাহিত্য সমিতি আয়োজিত চিত্র প্রদর্শনী ও বুক স্টলের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়।
এদিকে আজ দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ তলা ছাত্রী হলের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হয়। হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, এই হলের নির্মান কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, দ ্রুততম সময়ে এর কাজ শেষ করা হবে। তিনি বলেন, এই হলের উদ্বোধন হলে ছাত্রীদের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। পাশাপাশি ১০ তলা বিশিষ্ট আরও দুটি ছাত্র ও একটি ছাত্রী হল তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি।